My Job Hunting Strategy In Private Organization_আমার চাকরি খোঁজার কৌশল :

সাল ২০১৪,
জানুয়ারীর শুরু কি শেষ হবে হয়তো, অষ্টম সেমেস্টার এর সাবজেক্টিভ এক্সাম শেষ। কিন্তু শেষ করেও হলো না শেষ। অষ্টম সেমেস্টার এক্সাম এর পর, থিসিস কমপ্লিট করতে আরো চার্-পাঁচ মাসের মতো লেগে গেলো। পরিশেষে জুন এর শেষ এর দিকে আমার ফাইনাল রেজাল্ট পেলাম। আজ থেকে চার্ বছর আগে ইনফরমেশন এতো সহজ ছিল না। সবাই বলতো লবিং ছাড়া জব হয় না। তাই সবার কথা মতো, কয়েকজন বড় ভাই এবং কিছু আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করলাম। আমার সিভি পাঠানো শুরু করলাম কিন্তু কোনো রেসপন্স পাচ্ছিলাম না। এমন একটা সময় ছিল তখন, কাউকে কোনো সিভি দিতে গেলেও একগাদা কথা শুনাতো আর জ্ঞান দিয়ে দিতো। ওই সময় সবচেয়ে বেশি শোনা প্রশ্ন ছিল, "কি করছিস এখন"?............ এভাবে কেটে গেলো আরো এক দুই মাস।

আমার এক নিকঠস্থ বড় ভাই এর কথা অনুযায়ি, সেভেন সেমেস্টার এর শেষের দিকে একটা বিডিজবস সিভি  কিছু কোর্স করেছিলাম তাই কোনো কুল কিনারা না পেয়ে আমি বিডিজবস এর সিভিটা আপডেট করে নিজে নিজে জব হান্টিং শুরু করলাম। প্রথম দিকে কোনো কলই পাচ্ছিলাম না। তাই আরো বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।  কিন্তু হাল ছাড়ি নি।  আমার সিভির দুর্বল দিক গুলো খুঁজে সেগুলো আপডেট করতাম। আমি বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজি ফলো করে এপলাই করতাম, যা সত্যি কাজে দিয়েছিলো। দেখলাম কয়েকটা কোম্পানি থেকে ইন্টারভিউ কল আশা শুরু করলো। এর পর প্রতি সপ্তাহে জব সার্কুলার গুলোকে শর্টলিস্ট করে রাখতাম, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার হার্ড কপি কুরিয়ার করে দিতাম। এভাবে করতে করতে অনেক গুলো কোম্পানি থেকে ইন্টারভিউ কল আসতে থাকলো। ফাইনালি ওই বছরের নভেম্বর এর শেষে এর দিকে পাওয়ার সিস্টেম নিয়ে কাজ করে এরকম একটা প্রাইভেট কোম্পানি তে আমি জয়েন করলাম। 


আমি এখন আমার স্ট্র্যাটেজি গুলো এখন একটা একটা বর্ণনা করবো, হয়তো এই স্ট্র্যাটেজি গুলো আপনাদের কাজে লাগবে। 

শুধু এপলাই অনলাইন এর উপর নির্ভর করতাম না,
বেশির ভাগ জব সার্কুলার এ এপলাই অনলাইন এর পাশাপাশি আরো কয়েকটা অপশন থাকে, যেমন ইমেইল এড্রেস, ইমেইল এপলাই, হার্ড কপি র মাধ্যমে ইত্যাদি। যে সকল জব সার্কুলার এর রেসপনসিবিলিটি আমার খুব পছন্দ হতো, সে সব গুলো আমি এপলাই অনলাইন এর পাশাপাশি হার্ড কপি দিয়ে এপলাই করতাম। হার্ড কপি তে থাকতো একটা কভার লেটার, সিভি (ছবি সহ) এবং সার্টিফিকেট এর কপি। 

একই সিভি ও কভার লেটার এর উপর নির্ভর করতাম না,
জব রেসপনসিবিলিটির উপর নির্ভর করে আমি আমার কভার লেটার আর সিভি ও আপডেট করতাম। বেপারটা একটু ব্যাখ্যা করি, আসলে আমি যখন কোনো লেকচারার পোস্ট এ এপলাই করতাম, তখন আমি আমার ৪ বছর গ্রাডুয়েশন লেভেল এর প্রজেক্ট , থিসিস ও টুকটাক রিসার্চ রিলেটেড কাজ গুলোকে ফোকাস করতাম। আর যদি কোনো প্রাইভেট কোম্পানি তে এপলাই করতাম, তখন গ্রাডুয়েশন লেভেল এ থাকাকালিন কয়েকটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট আর কিছু কোর্স করেছিলাম, সেগুলোকে ফোকাস করতাম। আর মাঝে মাঝে রেসপনসিবিলিটি উপর নির্ভর করে টুকটাক সিভি ভেরিয়েশন করে নিতাম। জাস্ট এতটুকুই। 

ফ্রেশার হয়েও ভালো সিভি,
যেহেতু কোনো জব এক্সপেরিয়েন্স ছিল না তাই চেষ্টা করেছিলাম যেন সিভিটা এটলিস্ট ভালো হয়। তাই খুঁজে খুঁজে বের করলাম একজন এমপ্লয়ার কোন কোন কোয়ালিটি গুলো খুজেঁন একজন ফ্রেশার থেকে। যেমনঃ বেসিক ডিসাইন নলেজ (অটোক্যাড), এম এস অফিস (এস্পেশালি ওয়ার্ড এন্ড এক্সেল), ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি, কিছু ফ্যাক্টরি রিলেটেড নলেজ।  এবং ওই সময়ই আমার প্রায় ১০ টা কোর্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট করি.যেগুলো আমাকে ফ্রেশার হিসেবেও ভালো সিভি বানাতে হেল্প করেছিল। 

সোশ্যাল মিডিয়া তে একটিভ থাকতাম,
ফেইসবুক এ তখন টুকটাক কিছু ইনফরমেশন আসতো, এই কোম্পানি তে লোক নিচ্ছে, ওই কোম্পানি তে লোক নিচ্ছে।  ওই সব নিউস দেখে ইমেইল এড্রেস কালেক্ট করে এপলাই করতাম।  

প্রস্তুতি,
প্রথম প্রথম কয়েকটা ইন্টারভিউ তে ব্যাপক অপমানিত হয়েছিলাম।  কারণ প্রাইভেট সেক্টর এ বই-এর পড়ার চাইতে প্রাকটিক্যাল রিলেটেড প্রশ্ন থাকতো বেশি।  যা হবার তাই।  কিন্তু কয়েকটা সেক্টর এ ইন্টারভিউ দেয়ার পর আইডিয়া হয়ে গেলো, কোন কোম্পানি তে গেলে কোন রিলেটেড প্রশ্ন থাকতে পারে।  পরের বার থেকে চেষ্টা করতাম আরো ভালো প্রিপারেশন নিয়ে যেতে।

পরিশেষে,
ইদানিং অনেকেই বলছে বিডিজবস বা বিভিন্ন জব হান্টিং সাইট থেকে নাকি ইন্টারভিউ কল আসছে না। এটা অনিস্বীকার্য যে, বর্তমান সময় আর ৪ বছর আগের সময় কার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাই বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কৌশলগত ভাবেও নিজেকে আপডেট করতে হবে। কারণ প্রাইভেট সেক্টর মানেই প্ৰতিবর্তন আর আধুনিকায়ন। কিন্তু আমি মনে করি এখনো যদি উপরের ৫ তা কৌশল, ভালো ভাবে ফলো করলে এখনো ইন্টারভিউ কল এবং ইন্টারভিউ তে ভালো করা সম্ভব। 

No comments

Theme images by enot-poloskun. Powered by Blogger.